নতুন অর্থবছরের প্রথম কার্যদিবস সোমবার (৫ জুলাই) সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। এদিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন হলেও চমক দেখিয়েছে বস্ত্র খাতের বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার। এ খাতের তালিকাভুক্ত ৫৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৭টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে বিমা খাতের ৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম কমেছে ৩৯টি কোম্পানির শেয়ারের, বেড়েছে মাত্র ১০টি কোম্পানির। এছাড়াও লেনদেন হয়নি দুটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। অর্থাৎ সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যে টানা চার দিন ছুটির পর সোমবার (৫ জুলাই) বিমা খাতের শেয়ারে হতাশার দিনে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা দিয়েছে বস্ত্র খাতের শেয়ার। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থাৎ কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটেও। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা মালিকানাবিহীন ২০ হাজার কোটি টাকার ফান্ড শিগগিরই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হচ্ছে। এছাড়াও মিয়ানমার ছেড়ে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোতে নতুন করে অনেক ক্রেতা বাংলাদেশ আসছে। এই খবরে উত্থানে ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ব্যাংক-বিমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বেশির ভাগ খাতের কোম্পানির দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দিনের লেনদেন শুরু হয়। তিন ঘণ্টার লেনদেনের প্রথম আধা ঘণ্টায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বাড়ে ৭৩ পয়েন্ট। এরপর হঠাৎ বিমা কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি শুরু করেন। তাতে সূচকের উঠানামা শুরু হয়। যা দিনের শেষ সময় পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে ৬৯ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ২৪০ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ও লেনদেন। ফলে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে উত্থান হলো। সোমবার (৫ জুলাই) ডিএসইতে মোট ৩৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৪৩টির, কমেছে ১১৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির। এদিন মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৫১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪০৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে। বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়ায় এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১১ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩২৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এরপর বেশি লেনদেন হয়েছে এমএল ডাইং লিমিটেডের শেয়ার। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে কেয়া কসমেটিকস, সন্ধানী লাইফ, ম্যাক্সন স্পিনিং, ন্যাশনাল ফিডস মিলস, ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স, মালেক স্পিনিং, জেনারেশন নেক্সট এবং আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৪০ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ২১৫টির, কমেছে ৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির শেয়ারের দাম। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ৬২ লাখ ৫২ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭৮ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার ২৫১ টাকা। তথ্যসূত্রঃ একুশে টিভি