সিলেটে গলাটিপে শ্বাসরুদ্ধ করে নিজের শিশুকন্যাকে হত্যা করলেন স্কুলশিক্ষিকা এক মা। নিহত শিশুর নাম সাবিহা আহমদ সাবিহা। তার বয়স ১ বছর ৫ মাস। বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে নগরীর শাহপরানের নিপুবন আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন বিকেলে পুলিশ নিহত শিশুর মা ও বাবাকে আটক করেছে। তারা হলেন- স্কুলশিক্ষিকা নাজমিন আক্তার ও তার স্বামী কাতার প্রবাসী সাব্বির আহমদ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোলাপগঞ্জ উপজেলার কালিকৃষ্ণপুরের নাজমিনের সাথে দক্ষিণ সুরমার বদলি এলাকার সাব্বির আহমদের বিয়ে হয়। এরপর থেকে তারা শাহপরান নিপুন আ/এ আজান মঞ্জিলে এলাকায় থাকেন। নাজমিন একটি বেসরকারি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষিকা ও তার স্বামী কাতার প্রবাসী। এর আগেও একটি বিয়ে হয়েছিল নাজমিনের। সেই সংসারে তার একটি সন্তান রয়েছে। বুধবার দুপুর ২টার দিকে স্বামীর সাথে পারিবারিক কলহের একপর্যায়ে শিশু সাবিহার মুখে বালিশ দিয়ে চাপা দেন নাজমিন। এরপর গলাটিপে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এসময় নাজমিনের ছোট বোন শিশুটিকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নাজমিন হাসপাতাল থেকে পালাতে চাইলে উপস্থিত লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। পরে কোতোয়ালি থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, পারিবারিক কলহের জেরে শিশু সাবিহাকে গলাটিপে হত্যা করেন তার মা নাজমিন। হাসপাতাল থেকে নাজমিন ও তার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি শাহপরান থানা এলাকায় হওয়ায় তারাই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। নিহত শিশুর লাশ ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়ে ওসি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজের মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন নাজমিন। থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের নাজমিন বলেন, ‘বিয়ের পর আমার স্বামী বিদেশ চলে যান। চার বছর পর দেশে ফিরেন। কিন্তু বিদেশ থাকা অবস্থায় তিনি আমার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেননি। দেশে ফিরে আমাকে অনেক বুঝিয়ে আবার সংসার শুরু করেন এবং আমি গর্ভবতী হই। গর্ভবতী রেখেই তিনি (স্বামী) আবার কাতার চলে যান।’ নাজমিন অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদেশে গিয়ে সাব্বির অভিযোগ করেন আমার গর্ভের সন্তান তার নয়। আমি তখন ডিএনএ টেস্ট করার কথা বলি। কিন্তু সাব্বির ও তার পরিবার আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে থাকে। সাব্বির ১৫ দিন আগে দেশে এসেছেন। কিন্তু একবারও মেয়েকে দেখতে আসেননি। বরং আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছেন।’