স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ৫ আগস্টের পরে হোটেল-রেস্তোরাঁ স্বাভাবিক নিয়মে খোলা রাখতে চায় মালিকরা। সেটা যদি সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে অর্ধেক আসনে বসিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ আবারো চালু করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তেরাঁ মালিক সমিতি। তারা বলেন, চলমান বিধিনিষেধে রেস্তোরাঁগুলো শুধু অনলাইন বা টেকওয়ের মাধ্যমে খাবার বিক্রি করতে পারছে। কিন্তু এ সেবার অন্তভূর্ক্ত রেস্তেরাঁর সংখ্যা সবোর্চ্চ ২ থেকে ৩ শতাংশ। এ কারণে সারাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। ফলে বর্তমানে মানবেতর দিনযাপন করছে এ খাতের উদ্যোক্তারা। সোমবার (২ আগস্ট) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন করে রেস্তোরাঁ মালিকরা এসব বক্তব্য তুলে ধরে। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান লিখিত বক্তব্যে বলেন, কোভিড মহামারিতে রেস্তোরাঁ খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কখনও অর্ধেক আসনে বসিয়ে আবার কখনও শুধু অনলাইন বা টেকওয়ের মাধ্যমে ব্যবসা সীমিত রাখা হয়েছে। কিন্তু টেকওয়ে দিয়ে ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়। রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি জানায়, সারাদেশে ৬০ হাজার রেস্তোরাঁয় ৩০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং প্রায় দুই কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোাক্ষভাবে জড়িত। তারা এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছে। করোনার প্রভাবে সারাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে বলে তারা দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির নেতারা সরকারের কাছে ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরেন। সেগুলো হলো: স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী হেটেল-রেস্তেরাঁ খোলা। তাও যদি সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে ৫০ভাগ আসনে বসিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ চালু করা। হোটেল রেস্তোরাঁর জন্য রানিং ক্যাপিটাল হিসেবে এসএমই খাত থেকে এ খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করা। যা সহজশর্তে, স্বল্প সুদে জামানত বিহীন এবং দীর্ঘ-মেয়াদী ঋণ। হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক-শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা প্রদান করা। শ্রমিকদের মোবাইলে অথবা নির্দিষ্ট কার্ড দেওয়ার মাধ্যমে নগদ অর্থ অথবা মাসিকভাবে খাদ্য সাহায়তা দেওয়া। হোটেল-রেস্তেরাঁ খাতকে শিল্পের মর্যাদা প্রদান করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে না রেখে একটি নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনা। এছাড়া ই-কমার্স টেকওয়ে, পার্সেল ও অনলাইন ডেলিভারির ক্ষেত্রে বর্হিঃবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন করা ও একটি সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়ন পূর্বক তাদের নিয়ন্ত্রণ করা। এসব প্রস্তাবনা মানবিকভাবে বিবেচনার অনুরোধ করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত এ খাতে ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি গাজী মো. ওসমান গনি, প্রধান উপদেষ্টা খন্দকার রুহুল আমিন, প্রথম যুগ্ম-মহাসচিব ফিরোজ আলম সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ আন্দালিব, কোষাধ্যক্ষ তৌফিকুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব ফয়সাল মাহবুব প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। সূত্রঃ একুশে টিভি