ম্যাচের প্রথম ঘণ্টায় বেশ নিয়ন্ত্রিত ছিল বাংলাদেশের বোলিং। আউট করার সুযোগও এসেছিল বেশ কয়েকবার। এরপরই যেন বদলে গেল চিত্র। বোলিংয়ে একের পর এক পরিবর্তন এনেও মেলেনি সাফল্য। সারাদিনে শ্রীলঙ্কার মাত্র একটি উইকেট ফেলেছে বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে পাল্লেকেলেতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন হতাশায় মোড়ানো ছিল বাংলাদেশের। আজ বৃহস্পতিবার এক উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে টেস্টের প্রথম দিন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। দিন শেষে উইকেটে ১৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন সেঞ্চুরিয়ান লাহিরু থিরিমান্নে ও ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন অসাদা ফার্নান্দো। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র উইকেটটি নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। বাংলাদেশের ৯৭তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হয় তাঁর। পাল্লেকেলেতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বেশ সাবধানী শুরু করেন দুই লঙ্কান ব্যাটসম্যান করুনারত্নে ও লাহিরু। দুজনে মিলে প্রথম সেশনে স্কোরবোর্ডে তোলেন ৬৬ রান। এর মধ্যে একাধিকবার সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। কিন্তু, একবারও কাজে লাগাতে পারলেন না। প্রথম ঘণ্টাতেই লঙ্কান অধিনায়ককে দুবার এলবির ফাঁদে ফেলতে আবেদন করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু সাফল্য আসেনি। এরপর করুনারত্ন ও লাহিরুর জুটি ভাঙার সুযোগ এসেছিল ২০তম ওভারে। তাসকিন আহমেদের করা বল করুনারত্নের ব্যাট ছুঁয়ে তা স্লিপে যায়। কিন্তু সেখানে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি। ২৮ রানে জীবন পান শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক। এ ছাড়া মিড অনেও ক্যাচের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন অধিনায়ক মুমিনুল। ওপেনিংয়ে নেমে উইকেটে থিতু হয়ে যান লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করানারত্নে। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি। আগের ম্যাচেও বাংলাদেশকে ভোগান তিনি। ওই টেস্টে করেন ডাবল সেঞ্চুরি। সাদা পোশাকে এই প্রথম টানা দুই ইনিংসে তিন অঙ্কের ঘরে গেলেন তিনি। লম্বা ইনিংস খেলে বাংলাদেশের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ান তিনি। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই ব্যাটসম্যানকে অবশেষে ফেরান অভিষিক্ত শরিফুল ইসলাম। তরুণ এই পেসারের বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন করুনারত্নে। ১১৮ রানে ভাঙে তাঁর প্রতিরোধ। ১৯০ বলে ১৫ চারে সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস। ভাঙে ২০৯ রানের ওপেনিং জুটি। অবশ্য জুটি ভাঙার আগে রেকর্ড হয়েছে শ্রীলঙ্কার। বাংলাদেশের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে এটাই তাদের সর্বোচ্চ। ওপেনিংয়ে জুটিতে করুনারত্নে ও লাহিরু মিলে ভেঙেছেন ২০ বছর আগের রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটি হয়েছিল ২০০১ সালে। সেবার ১৪৪ রানের জুটি গড়েছিলেন সনাৎ জয়াসুরিয়া ও মারভান আতাপাত্তু। করুনারত্নে ফেরার পর সেঞ্চুরি তুলে নেন লাহিরুও। তাসকিনের বলে এক্সট্রা কাভার দিয়ে বল পাঠিয়ে তিনটি রান নিয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। ২১২ বলে তাঁর সেঞ্চুরিতে ছিল ১১ চার। সেঞ্চুরির পর ফার্নান্দোর সঙ্গে দিনের বাকি সময় নিশ্চিন্তে পার করেন লাহিরু থিরিমান্নে সংক্ষিপ্ত স্কোর শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৯১/১ (করুনারত্নে ১১৮, থিরিমান্নে ১৩১*, ফার্নান্দো ৪০*; মিরাজ ২২-৪-৬৭-০, তাইজুল ১৯-২-৫৬-০, শরিফুল ১৬-৩-৫২-১, তাসকিন ১৭-৩-৬৯-০, রাহি ১৬-৩-৫৬-০)। সূত্রঃ এন টিভি