কওমি অঙ্গনে বিরাজমান অস্থিরতা থেকে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাব্যবস্থার সুরক্ষা এবং উলামায়ে কেরামের শান ও মান বজায় রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় নানামুখী দীনী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নিতে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর স্থায়ী কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৫ এপ্রিল রোববার জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আল-হাইআতুল উলয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান। আল-হাইআতুল উলয়ার কো-চেয়ারম্যান আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের মাগফিরাত কামনা করে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় সভা। এতে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশবাসীসহ বিশ্বমানবতার জন্যও দু‘আ করা হয়। সভায় নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়: ১। কওমি মাদরাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে একমাত্র আল-হাইআতুল উলয়া। আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন এক বা একাধিক বোর্ড কিংবা কোন সংগঠন বা ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ব্যতীত পৃথকভাবে কওমি মাদরাসা বিষয়ক কোন সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ বা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে না। ২। কওমি মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষকগণ প্রচলিত সর্বপ্রকার রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে মর্মে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ৩। আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের জন্য এবং কওমি মাদরাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ ও তত্ত্বাবধানের জন্য আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন ৫ বোর্ডের ৫ (পাঁচ) জন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া থেকে ৫ জন এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত ৫ (পাঁচ) জন সমন্বয়ে সর্বমোট ১৫ (পনের) জনের একটি ‘বাস্তবায়ন সাব-কমিটি’ গঠিত হবে। ৪। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কওমি মাদরাসার যে সকল নিরীহ ছাত্র, শিক্ষক, আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং মসজিদের ইমাম ও মুসল্লীদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, রমাযানের এই রহমতের মাস বিবেচনায় সরকারের নিকট তাদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয় এবং নিরীহ আলেম-ওলামা, মাদরাসার ছাত্র ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হয়রানী না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। ৫। পবিত্র রমাযান কুরআন তেলাওয়াতের মাস। কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বালা-মুসিবত ও মহামারী দূর হয়। তাই রমাযানের মধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিফজ ও মক্তব বিভাগ খুলে দেওয়ার জন্য এবং রমাযানের পর কওমি মাদরাসার শিক্ষাকার্যক্রম চালু করার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে আবেদন করা হয়। ৬। আল-হাইআতুল উলয়ার আজকের সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করার জন্য ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের মাননীয় স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সদস্যগণ হলেন : (১) মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন (২) মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী (৩) মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন। সভায় উপস্থিত ছিলেন আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, মাওলানা ছফিউল্লাহ, মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুছলেহুদ্দীন রাজু, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুফতি নূরুল আমীন, মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন। বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গার সভাপতি মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন, মহাসচিব মাওলানা শামসুল হক; আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের সভাপতি মাওলানা সুলতান যওকের প্রতিনিধি মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলীল, মাওলানা আব্দুল হালীম বুখারীর প্রতিনিধি মাওলানা উবায়দুল্লাহ হামযাহ; আযাদ দীনী এদারায়ে তা‘লীম এর সভাপতি মাওলানা জিয়াউদ্দীন এর প্রতিনিধি মাওলানা এনামুল হক, মহাসচিব মাওলানা আব্দুল বছীর; তানজীমুল মাদারিসের সভাপতি মাওলানা মুফতি আরশাদ রাহমানী, মহাসচিব মাওলানা ইউনুস এবং জাতীয় দীনী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের প্রতিনিধি মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মহাসচিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী। এ ছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন আল-হাইআতুল উলয়ার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল এবং অফিস সম্পাদক মাওলানা মু. অছিউর রহমান।