সরকারের জাতীয় বাজেট ঘাটতি মেটানোর অন্যতম সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকার এ খাতে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করে। শর্ত দেয়, সঞ্চয়পত্র কিনতে লাগবে জাতীয় পরিচয়পত্র, ই-টিআইএন। এছাড়া পঞ্চাশ হাজার টাকার বেশি হলেই জমা দিতে হবে চেকের মাধ্যমে। বেঁধে দেওয়া এমন নিয়মে যারা নিজের জমানো অর্থ নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন, তাদের অনেকেই বিমুখ হন এ খাত থেকে। আগের বছরগুলোতে পারিবারিক স্কিম সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকলেও গত অর্থবছর নিট বিক্রি ছিল অনেকটাই কম। মাত্র তিন হাজার তিনশো কোটি টাকা। সেই ধারা কয়েকগুণ পিছিয়ে ফেলে পারিবারিক সঞ্চয়পত্রে আবারও আস্থা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। চলতি অর্থবছর জুড়ে বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল নিট ২০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এ পরিমাণ লক্ষ্য পূরণে বাজিমাত প্রথম ছয় মাসেই। আর সাত মাসে লক্ষ্যমাত্রা টপকে নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকায়। এর মধ্যে সাত মাসে শুধু পারিবারিক সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৩ হাজার ৬১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকে আসা ক্রেতারা জানান, ব্যাংকের চেয়ে সঞ্চয়পত্রে লাভের হার বেশি বলেই সঞ্চয়পত্র কিনছেন তারা। এছাড়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অর্থ জমিয়ে তারা ব্যাংকের চেয়ে এ খাতে রাখাকেই স্বাচ্ছন্দ্য মনে করেন। এদিকে অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউসুফ সময় সংবাদকে বলেন, সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতে সরকারের ভাল পদক্ষেপের মধ্যে একটি সঞ্চয়পত্র বিক্রি। তবে দেখতে হবে, বিক্রির বিপরীতে সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় যেন অধিক পরিমাণে না বাড়ে। ড. ইউসুফ আরো বলেন, একটি দেশের মূল্যস্ফীতি আর ব্যাংকের আমানতের সুদহার যদি এক হয়, তাহলে সাধারণ গ্রাহকরা কোনভাবেই ব্যাংকে আমানত রাখবেন না। তারা বিকল্প পথ খুঁজবে। এছাড়া বিনিয়োগেরও তেমন কোন ভাল পরিবেশ না থাকায় গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্রমুখি হচ্ছেন। বিনিয়োগের পরিবেশ ভাল হলে এ খাত থেকে বিনিয়োগকারীরা বিমুখ হবেন বলেও মনে করেন তিনি। এদিকে মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত জানুয়ারি পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রের মূল টাকা পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। বিপরীতে সুদ পরিশোধ হয়েছে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা। সূত্রঃ সময় টিভি