পৃথিবীর মাটিতে পা রেখেও কেবল শক্তিশালী টেলিস্কোপের সৌজন্যে সৌরজগত থেকে অসীম দূরত্বে অবস্থিত মহাজাগতিক সৌন্দর্যকে অবলোকন আর নতুন কিছু নয়। এবার মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসা প্রকাশ করল এমন এক ছায়াপথের ছবি, যা পৃথিবী থেকে ১০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। তার নীলচে শরীর সত্যিই তাক লাগিয়ে দেয়। সোমবার (৮ মার্চ) ভোর ৪ টা ২০ মিনিটে NGC 2336 নামের এক অতিকায় এই ছায়াপথের ছবি শেয়ার করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। এই ছায়াপথ অবশ্য বিজ্ঞানীদের কাছে নতুন নয়। জ্যোতির্বিদ উইলিয়াম টেম্পল ১৮৭৬ সালেই পেয়েছিলেন এই ছায়াপথের হদিশ। এবার সেই ছায়াপথের ছবিই তুলতে সক্ষম হল হাবল টেলিস্কোপ। শুধু ছবিই নয়, ছায়াপথটি সম্পর্কে কৌতূহলোদ্দীপক তথ্যও জানিয়েছে নাসা। পৃথিবী থেকে কার্যত 'অসীম' দূরত্বে অবস্থিত এই ছায়াপথটি প্রায় দেড়শো বছর আগে আবিষ্কার করার সময় উইলিয়াম টেম্পল ব্যবহার করেছিলেন একটি ১১ ইঞ্চির খুদে টেলিস্কোপ! এই ছায়াপথটির শরীর জুড়ে কেবল নীল রংই নয়, দৃশ্যমান লাল রংও। নাসা জানিয়েছে, ছায়াপথটির বাহুতে রয়েছে নবীন নক্ষত্ররা। সেই কারণেই ওই উজ্জ্বল নীল রং। পাশাপাশি ছায়াপথটির কেন্দ্রের লাল রংয়ের উৎস হল অপেক্ষাকৃত বৃদ্ধ তারাগুলি। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে নাসার পারসিভারেন্স রোভার মঙ্গলের মাটিতে নেমে সেখানকার পরিস্থিতি জরিপ করে দেখছে। সম্প্রতি সেখানকার মাটিতে হাঁটাচলাও করতে দেখা গিয়েছে রোভারকে। আশা করা হচ্ছে, মঙ্গল সম্পর্কে অজানা তথ্য জানাতে সক্ষম হবে রোভার। নাসার ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (০৪ মার্চ) মঙ্গল গ্রহের ২১ দশমিক ৩ ফুট এলাকা জুড়ে ঘোরাফেরা করে পারসিভারেন্স। এ ঘটনাকে মঙ্গলগ্রহ অভিযানে এক অনন্য মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ প্রসঙ্গে পারসিভারেন্স মোবিলিটি টেস্ট বেড ইঞ্জিনিয়ার অ্যানেইস জারিফিয়ান বলেন, আমাদের টেস্ট ড্রাইভ দারুণ হয়েছে। মঙ্গলের মাটিতে আমরা চাকার দাগ রেখে এসেছি। চাকার দাগ অনেকবারই দেখেছি। তবে মনে হয় না কখনোই এতটা খুশি হয়েছি। এই তো সবে শুরু। আমরা আরও দীর্ঘ টেস্ট ড্রাইভ করবো। প্রথমে ১৩ দশমিক ১২ ফুট এগিয়ে গিয়ে ১৫০ ডিগ্রি বাঁ-দিকে মুখ ঘোরায় পারসিভারেন্স। এর পর পিছিয়ে আসে ৮ দশমিক ২ ফুট। মঙ্গলের একদিনের সময় অনুযায়ী রোবটযানটি প্রতিদিন ২০০ মিটার ঘোরাফেরা করতে পারে। যদিও এ ব্যাপারে দক্ষতায় পারসিভারেন্স এগিয়ে রয়েছে আগে পাঠানো নাসার রোভার কিউরিওসিটির চেয়ে। কিউরিওসিটির তুলনায় ৫ গুণ দ্রুত গতিতে এগোতে পারে নতুনটি। মঙ্গলে পা রাখার ৮ বছর পর এখনো কাজ করে চলেছে কিউরিওসিটি। ‘মার্স ২০২০’ প্রকল্পের অন্যতম বিজ্ঞানী কেন উইলিফোর্ড বলেন, জীবনের চিহ্ন খোঁজার জন্য সবচেয়ে আদর্শ জায়গা হচ্ছে জেজেরো হ্রদ। আমি এমনটাই মনে করি। এর উপকূল কার্বন এবং নানা খনিজ পদার্থের সন্ধান মিলেছে। তাই এখানে জীবাশ্ম থাকার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।