ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীর থেকে ১৬০ জনের বেশি রোহিঙ্গাকে আটক করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। নিপীড়িত এই সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অভিযোগ মিয়ানমারে যা ঘটেছে তার পুনরাবৃত্তি এখন জম্মুতে ঘটছে। ভারতের বিভিন্ন শহরের বস্তিতে বসবাসকারী অবৈধ রোহিঙ্গাদের খুঁজে বের করতে আঞ্চলিক প্রশাসন পুলিশকে নির্দেশ দেয়ার পর শনিবার থেকেই জম্মুতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আটক অভিযান শুরু হয়েছে। ২০১৭ রোহিঙ্গাদের ওপর অভিযানের নামে অত্যাচার-নির্যাতন চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সে সময় সেনাবাহিনীর নিপীড়ন থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতে আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিলেও ভারতে খুব অল্প সংখ্যক রোহিঙ্গার ঠাঁই হয়েছে। গত কয়েক বছরে জম্মুতে প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম আশ্রয় নিয়েছে। জম্মু, হায়দরাবাদ, নুহ এবং রাজধানী দিল্লিসহ বেশ কিছু শহরের বস্তি বা শরণার্থী ক্যাম্পে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাস করছে। এদের মধ্যে অনেকেই অবৈধ। আটক হওয়া রোহিঙ্গাদের জম্মু থেকে ৫৯ কিলোমিটার দূরের হিরানগর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আটক হওয়া এসব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। কিন্তু মিয়ানমারে এখন সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত মাসের ১ তারিখে বেসামরিক সরকারকে সরিয়ে দেশের ক্ষমতা দখল করে নেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তার কয়েকদিন পর থেকেই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামে দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এদিকে, দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সামরিক সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন পর্যন্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে দেশটিতে অর্ধ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই অবৈধ অভিবাসীদের জাতীয়তা যাচাই-বাছাইয়ের পর বিস্তারিত তথ্য দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হবে। এরপর তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু হবে। মোহাম্মদ ইব্রাহিম নামে জম্মুর নরওয়াল এলাকার একটি ক্যাম্পে থাকা এক রোহিঙ্গা বলেন, শনিবার সকালে সেখানে পুলিশের একটি বড় টিম পৌঁছায়। সেখানকার লোকজনকে সাধারণ যাচাই-বাছাই এবং কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য কাছাকাছি একটি খেলার মাঠে পাঠানোর জন্য রোহিঙ্গা নেতাদের বলা হয়।