ইরাক সফরে রয়েছেন ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। প্রথমবারের মতো ইরাক সফরে গিয়ে সৃষ্টিকর্তার নামে সহিংসতা, উগ্রবাদ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিহারের আহ্বান জানিয়েছেন। খ্রীষ্টান অধ্যুষিত পশ্চিমা বিশ্ব রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে মুসলিম জনপদ ইরাকের সুন্নি মুসলিমদে উপর যে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে সে ব্যাপারে কোন একটি কথা না বললেও পোপ মুসলিম হত্যাকারীদের পোপাগান্ডার সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলেছে। যা থেকে বুঝা যাচ্ছে- যারা সেখানে প্রতিরোধ করছে তারা আল্লাহর নামে সন্ত্রাস করছে। উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে। সহিংসতা করছে। একটি বারের জন্যও পোপ বলেননি, সাদ্দাম সরকারের উপর মারনাস্ত্রের মিথ্যা অভিযোগে হাজার হাজার মুসলিম হত্যার অমানবিক নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে। বরং পোপকে মনে হতে পারে তাদের প্রতিনিধি হয়ে হত্যা লিলাকে পাশ কাটিয়ে খ্রীস্টান সম্প্রদায়কে বিপর্যস্ত মুসলিমদের খ্রীস্টান বানানোর সুযোগ গ্রহণের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে সেখানে এসেছে। নতুবা একজন সর্বোচ্চ খ্রীস্টান পোপের ইরাকে যাওয়ার মত কোন পরিবেশ বা যুক্তি নেই। প্রয়োজনও নেই। গতকাল শনিবার (৬ মার্চ) ইরাকের শিয়া মুসলমানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ আলী সিসতানির সঙ্গে বৈঠকের পর পোপ ফ্রান্সিস এই আহ্বান জানান। এর আগে, গত শুক্রবার (৫ মার্চ) অল ইটালিয়ার একটি উড়োজাহাজে বাগদাদ পৌঁছান পোপ। বিমানবন্দরে অবতরণের পর তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় অভ্যর্থনা জানানো হয়। তাকে স্বাগত জানান ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল কাদহিমি। পরে মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে যান পোপ। করোনা মহামারি শুরুর পর ৮৪ বছর বয়সী পোপ ফ্রান্সিসের এটা প্রথম আন্তর্জাতিক সফর। পোপ ইরাকের ক্রমহ্রাসমান খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে অধিকার, স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে আরও বেশি ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আশা করেন, ইরাকের সর্বাধিক শ্রদ্ধেয় শিয়া মুসলিম আলেমের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং এই আন্তঃধর্মীয় সংলাপের পর ধর্মীয় উগ্রপন্থা, সংঘাত ও অসহিষ্ণুতার অবসান ঘটবে। ২০১৩ সালে পোপ হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার পর এটিই তার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সফর। এ সফরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয় গোটা বাগদাদ।