ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটকে তাদের উৎপাদিত করোনা ভ্যাকসিনের ১০ লাখ ডোজ ফিরিয়ে নিতে বলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় সম্প্রতি ছোট পরিসরের একটি ট্রায়ালে দেখা গেছে, দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের বিরুদ্ধে খুবই সামান্য সুরক্ষা দিচ্ছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। এর পরপরই সেটির ব্যবহার স্থগিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার অনুমতি সাপেক্ষে তাদের আবিষ্কৃত করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট। তারা এর নাম দিয়েছে ‘কোভিশিল্ড’। চলতি মাসের শুরুর দিকেই দক্ষিণ আফিকায় কোভিশিল্ডের ১০ লাখ ডোজ পাঠিয়েছিল সিরাম। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরও পাঁচ লাখ ডোজ দেওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু হাতে পাওয়া ভ্যাকসিন ব্যবহার না করেই এখন সেগুলো ফিরিয়ে দিতে চাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার। এ বিষয়ে জানতে সিরাম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগযোগ করেছিল আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে তারা এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তারা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের ডোজগুলো বিক্রিও করতে পারেন। দ্য গার্ডিয়ানের তথ্যমতে, দক্ষিণ আফ্রিকায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে প্রায় দুই হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন এবং এর ফলাফলে দেখা গেছে, ভ্যাকসিনটি করোনার নতুন ধরনের ক্ষেত্রে মৃদু ও মধ্যম সংক্রমণের বিরুদ্ধে মাত্র ১০ শতাংশ সুরক্ষা দেয়। অথচ দেশটিতে করোনার ৯০ শতাংশ সংক্রমণের জন্যই নতুন ধরন দায়ী বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। একারণে সপ্তাহখানেক আগে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ব্যবহার স্থগিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে দেশটিতে ভ্যাকসিন ট্রায়ালে নেতৃত্ব দেওয়া ইউনিভার্সিটি অব দ্য উইটওয়াটার্সর্যান্ডের অধ্যাপক শাবির মাহদি বলেছেন, জনসন অ্যান্ড জনসনের মতো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনও একটি নির্দিষ্ট বয়সী জনগোষ্ঠীর গুরুতর রোগের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করতে পারে। এদিকে, সোমবার জরুরি ব্যবহারের জন্য অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল এই ভ্যাকসিন ব্যবহারের সুপারিশ করার কয়েক দিন পরেই এ ঘোষণা দিল সংস্থাটি।