চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৯০ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরই কাজে দক্ষতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থার সদ্য বিদায়ী প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। তিনি বলেছেন, ‘করপোরেশনের ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে অন্তত নয় হাজারই অদক্ষ। হোল্ডিং ট্যাক্স অটোমেশনে না আসা এবং অদক্ষ কর্মচারীদের কারণে নগরবাসীকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না সিটি করপোরেশন।’ বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মহানগরের একটি ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আগামীতে দক্ষ কর্মচারী নিয়োগ এবং হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় অটোমেশনের আওতায় আনার পাশাপশি সিটি করপোরেশনের দুর্নীতি বন্ধে মেয়রকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার পারামর্শ দেন। খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘ছয়মাস যুদ্ধ করেছি। এলাকার অনেকের ভালোবাসা পেয়েছি, অনেকের গালমন্দ শুনেছি। গণমাধ্যমের সহযোগিতা আমার চিরকাল মনে থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘কাস্টম হাউসের রাজস্ব থেকে চসিককে এক শতাংশ দিতে হবে। চট্টগ্রামের উন্নয়ন হলে সমগ্র দেশের উন্নয়ন হবে। একেকটি কারখানা চসিককে বছরে দুই হাজার ডলার দিতে পারে। দরকার হলে আইন করা হোক। রড ফ্যাক্টরির ইয়ার্ড কি শহরের রাস্তাঘাট?’ সুজন আরও বলেন, ‘চসিকের সম্পত্তি পাবলিক প্রপার্টি। দুপুর ১২টায়ও অনেকে অফিসে আসে না। আমি সোয়া ৯টায় গেট বন্ধ করে দিয়েছি তিন দিন। চসিকে দক্ষ জনবলের অভাব। নিয়োগের নিয়ম বালাই নেই। দক্ষ জনবল চসিকের বড় সম্পদ। পৌরসভা চসিক হয়েছে। মানসিকতা পৌরসভার। পরিচ্ছন্ন বিভাগে অতিরিক্ত জনবল আছে। সবসময় কাজে নেই, হাজিরা আছে।’ তিনি বলেন, ‘১৮ কোটি টাকা বেতন। মার্চ থেকে ১৯ কোটি টাকা হবে। জ্বালানি ও গ্যাসে তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ। আমার ডাকে পৌরকর বাড়াতে মানুষ সাড়া দিয়েছেন, আমি কৃতজ্ঞ। হোল্ডিং ট্যাক্সের জন্য আপিল বোর্ড বানিয়ে দিয়েছিলাম। আমি বলেছি- যা দিতে চায় নিয়ে নেন। হোল্ডিং ট্যাক্স অটোমেশনে আনতে পারলে আরও বেশি আদায় করতে পারতাম। চট্টগ্রামের মানুষ লাইনে দাঁড়াতে চান না। অনেক কর কর্মকর্তাকে বদলি করেছি, অডিট করিয়েছি। অনেক ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স ফি আদায় করে চসিকের বালামে তুলেনি। ব্যবস্থা নিতে কমিটি করে দিয়েছি।’ সদ্য বিদায়ী প্রশাসক আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক সংগঠনের জন্য আমি যেমন প্রস্তুত, তেমনি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কাজের জন্যও প্রস্তুত। অনেকবার সংসদ সদস্য ও মেয়র পদে মনোনয়ন চেয়েছিলাম, বিবেচিত হইনি। ছয়মাস সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারি দিতে চেষ্টা করেছি। সিটি করপোরেশন আমার জন্য নতুন কিছু নয়। এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে ১৭ বছর কাছাকাছি ছিলাম। উনাকে দেখে আমার অভিজ্ঞতা হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পিসি রোড, যেটি খালের ভিতর ছিল। এখানে অর্থের অভাব ছিল না। দুইজন ঠিকাদার ছিল অদক্ষ, এরমধ্যে একজন জিকে শামিমের পার্টনার। আমি কুমিল্লা থেকে আনালাম। বললাম- কাজ শেষ না করে ফিরতে পারবে না। তার অনেক পাওনাদার ছিল। মানুষের কষ্ট আমি দেখেছি, দুঃসহ অবস্থা। সড়কের পূর্ব অংশ কমপ্লিট করেছি। ছয়মাস যুদ্ধ করেছি। এলাকার অনেকের ভালোবাসা পেয়েছি, অনেকের গালমন্দ শুনেছি। গণমাধ্যমের সহযোগিতা আমার চিরকাল মনে থাকবে।’ -আবু আজাদ জাগোনিউজ